প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত

 
আজকে আমরা কথা বলবো গাজর খাওয়ার উপকারীতা নিয়ে। গাজর খাওয়ার সঠিক সময়, গাজর দেহের জন্য কতোটা দরকারী এবং প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত? গাজর হচ্ছে একটি শীতকালীন সবজি, বর্তমানে এটি সারা বছর উৎপাদন হয়ে থাকে। গাজর আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি।
ইমেজঃ ১
গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে১, বিটা ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবারসহ আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান। গাজর খাওয়ার উপকারীতা এবং কতটুকু খাওয়া উচিত এর সকল তথ্য আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই আর দেরি না করে আসুন সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

পেজ সুচিপত্রঃ গাজর খাওয়ার উপকারীতা ও নিয়ম

গাজর খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে

গাজর আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। এটি আমাদের দেহের অনেক উপকার করে থাকে। গাজর খাওয়ার সঠিক সময় মূলত আমাদের স্বাস্থ্য ও রুটিনের ওপর নির্ভর থাকে। তবে  গাজর খাওয়ার জন্য কিছু সময়কে বিশেষভাবে উপযোগী বলে বিবেচিত করা হয়। যেমন সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে অথবা পরে খাওয়া যেতে পারে। কেননা গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার আমাদের দিন শুরু করার জন্য ভালো। তারপর দুপুরের খাবারের আগে অথবা খাবারের সাথে খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া গাজর খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত। এ সময় গাজরের পুষ্টি উপাদান শরীরে ভালোভাবে গ্রহন করে।

গাজর খাওয়ার সকল উপকারীতা হলো

আমরা অনেকেই জানি গাজর খাওয়ার উপকারিতা এবং অনেকেই তা জানি না। নিয়মিত গাজর খেলে আমাদের দেহের অনেক সমস্যার সমাধান হয়। গাজরে থাকা ভিটামিন আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গাজর খাওয়ার অনেক উপকারীতা রয়েছে যথা 

  • ভিটামিনঃ গাজরের মধ্যে অনেক পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। তাছাড়া গাজরের ভিতরের থাকা বিটা ক্যারোটিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি কম হওয়ার মতো সমস্যা হওয়া থেকে বাধা দেয়। 
  • ক্যান্সার থেকে রক্ষাঃ খাবার হজমের পরে শরীরে মধ্যে কিছু ক্ষতিকর উপাদান তৈরি হয়ে থাকে। যে গুলোকে ফ্রি র‍্যাডিকেল বলা হয়ে থাকে। এগুলো আমাদের শরীরের কোষ গুলোকে নষ্ট করতে পারে। কিন্তু গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার এসব ক্ষতি থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি দূর করে।
  • গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ গাজরের মধ্যে ক্যারটিনয়েড নামের এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে এবং রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজরের জুস নিয়মিত খেলে মুখের দাগ দূর হয় এবং বয়সের ছাপ ও দূর করে আর দেখতে ইয়্যাং লাগে।
  • হৃৎপিণ্ডের সুস্থতায়ঃ শরীরকে সক্রিয় রাখতে ভালো ঘুম এবং দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকলে হার্ট ভালো থাকে। গাজরের মধ্যে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের রক্তনালীতে কোনো ক্ষতিকর জিনিস জমতে দেয় না। এর ফলে আমাদের দেহে রক্ত সহজে চলাচল করতে পারে এবং হার্ট সুস্থ থাকে।
  • সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখেঃ কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে গাজর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। এর পেছনের মূল কারণ হচ্ছে গাজরে থাকা পটাশিয়াম, যা আমাদের দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুকি কমায়। গাজরের মধ্যে ক্যালোরি ও সুগার এর মাত্রা অনেক কম তার জন্য এই খাবারটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি নিরাপদ খাবার। নিয়মিত গাজর খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অতিরিক্ত চর্বি জমে না। ফলে দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ঃ গাজরের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে। যা ত্বককে ভেতর থেকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। গাজরের ভেতরে থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বক শুকাতে দেয় না। ত্বকের রঙ বা স্কিন ভালো ও উজ্জ্বল করে এবং দাগ ছোপ পড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাই নিয়মিত গাজর খেলে ত্বক আরো উজ্জ্বল হয়।
এছাড়াও গাজরের আরও উপকারীতা রয়েছে যথা
গাজরের ভেতরে থাকে বা রয়েছে অনেক পরিমানে বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের চোখের পযাপ্ত ভিটামিনের যোগান দেয় এবং চোখের স্নায়ুকে করে তুলে আরো শক্তিশালী। যারা প্রতিদিন নিয়মিত  গাজর খায় তাদের চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তর হয় যা চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে, রাতকানা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

তাছাড়া গাজর আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দারুন কার্যকর। গাজরের ভিতরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বককে আরো মসৃণ ও প্রানবন্তর করে। নিয়মিত গাজর খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে এবং বয়সের চাপ দূর হয়। 

ছোট শিশুদের জন্য গাজর অনেক উপকারী। নতুন দাঁত বের হয়েছে অথবা সবজি খিচুড়ি খেতে পারে এমন শিশুদের জন্য গাজরের খিচুড়ি অনেক উপকারী একটি খাবার। গাজর খাওয়ায় দাঁতের মাড়ির গোড়া শক্ত হয় এবং পেটের খাবার হজম হয় ভালোভাবে। কারণ গাজরে রয়েছে অনেক পরিমানে আঁশযুক্ত উপাদান যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শিশুদের যখন কোটার দুধ খাওয়ানো হয় তখন শিশুদের তখন অনেক সময় তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়।

এর কারণ হচ্ছে কোঁটার দুধে প্রাকৃতিক আঁশ বা হজমে সহায়ক উপাদান তাহকে না। এই সমস্যা দূর করতে গাজরের খিচুড়ি খাওয়া খুবই উপকারী। গাজরে থাকা আঁশ শিশুর হজম শক্তি বাড়ায় এবং মল নরম করতে সাহায্য করে। আর যদি শিশু হালুয়া খেতে না চায় তাহলে বিকল্প হিসেবে আপনি তাকে গাজরের হালুয়া দিতে পারেন। গাজরের হালুয়া শুধু খেতেই সুসাধু নয় এটা শিশুদের বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

আমাদের দেহের চর্বি কমাতে সহায়তা করে গাজরের রস। যা আমাদের শরীরের ওজন কমায় তাই আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। তাছাড়া গাজর আমাদের রক্তের প্রধান উপাদান আরবিসিকে সক্রিয় করে এবং রক্তে বেড়ে যায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। যা আমাদের রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে।

আমাদের রক্তের মধ্যে খারাপ কোলেস্টেরল থাকে যা রক্তে জমে ধমনিতে ব্লক তৈরি করে। এর কারনে হূৎপিণ্ড থেকে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয় যার ফলে আমাদের হৃদরোগের ঝুকি বাড়ে। নিয়মিত গাজর খেলে  গাজরে থাকা উপাদান রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

আমাদের যদি বড় ধরনের অপারেশনের পর শরীরে রক্তের ঘাটতি দেখা যায়। এই ঘাটতি পুরনের জন্য গাজর সহায়তা করে। নিয়মিত প্রতিদিন গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের মেধা বৃদ্ধি হয় এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুকে আরো সক্রিয় করে তোলে। 

খালি পেটে গাজর খাওযার উপকারীতা

আমরা অনেকেই জানিনা যে খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারীতা কী, খালি পেটে গাজর খাওয়ার অনেক উপকার রয়েছে। আমরা অনেকেই না জেনে খালি পেটে অথবা ভরা পেটে গাজর খেয়ে থাকি। অনেক গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে খালি পেটে গাজর খেলে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম ভালো রাখে অর্থাৎ হৃদয় ও রক্তনালী ভালো রাখে। তাছাড়া গাজরের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ , মিনারেল ও খনিজ আমাদের দেহের সকল পুষ্টি উপাদানের যোগান দিয়ে থাকে।

খালি পেটে গাজরের জুস আমাদের চোখের সকল ধরনের সমস্যা দূর করে। গাজর আমাদের দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আমরা যদি নিয়মিত খালি পেটে গাজর খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।নিয়মিত গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ গুলো বার হয়ে যায়।

আমরা যদি খালি পেটে নিয়মিত গাজর খায় তাহলে আমাদের শরীরের অনেক উপকার হবে এবং শরীর থাকবে সুস্থ। তাই গাজরের ভালো ফলাফল পেতে হলে আমাদের কে নিয়মিত খালি পেটে গাজর খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত

আমরা অনেকেই জানিনা যে প্রতিদিন আমাদের কতটুকু গাজর খাওয়া দরকার। গাজর কতটুকু খেতে হবে না হবে আজ আমি আপনাদের এই বিষয়ে বলবো। গাজর বেশি খেলে তা আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করতে পারে। কেননা গাজরে যেমন উপকারীতা রয়েছে তেমনি রয়েছে এর কিছু অপকারীতা। গাজর আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় যদি বেশি খায় তাহলে তা আমাদের শরীরের অনেক সমস্যা করতে পারে তাই প্রতিদিন আমাদের কি পরিমান গাজর খেতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক।

গাজর আমাদের দেহের জন্য উপকারী একটি সবজি। গাজর আমরা অনেকেই অনেক রকম ভাবে খেয়ে থাকি কেও রান্না করে আবার কেও কাচা কাচা। তবে গাজর রান্না করে খাওয়ার থেকে গাজর কাচা খেলে সব থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়। গাজর আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে প্রতিদিন ১০০ গ্রাম গাজর গাজর খেতে হবে।
অনেক গবেষণাই পাওয়া গিয়েছে যে গাজর শরীরের ক্যালোরির পরিমান কমাতে সাহায্য করে। গাজর খেলে পেট ভরা থাকে এবং খিদা কম লাগে, গাজরে আছে পর্যাপ্ত পরিমান পানি যা শরীরের ফ্যাট বার্ন করে  বিপাক ক্রিয়াকে সহজ করে যা আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে। তাই আমাদের নিয়মিত প্রতিদিন ১০০ গ্রাম গাজর খাওয়া উচিত।

গাজরে থাকা সকল পুষ্টি উপাদান

গাজর আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আমাদের দেহকে সুস্থ ও শবল রাখে। গাজরের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই এখন আমরা দেখবো গাজরের ভেতর‍ে থাকা সকল পুষ্টি উপাদান। তাই ১০০ গ্রাম গাজরের মধ্যে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে চলুন দেখে নেওয়া যাক। 

১০০ গ্রাম গাজরে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো হলো
  • বিটা ক্যারোটিনঃ ৮,২৮৫ মাইক্রোগ্রাম এই উপাদানটি ভিটামিন এ তে পরিনিত হয় যা আমাদের চোখের জন্য অনেক উপকারী।
  • ভিটামিন এঃ ১৬৭০৭ ওট যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি, ত্বকের ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  •  ক্যালোরিঃ ৪১ কিলোক্যালোরি। 
  • খাদ্যআশঃ ২.৮ গ্রাম। এটি আমাদের হজমে সাহায্য করে এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করে।
  • ভিটামিন বি-১ঃ ০.০৪ মিলিগ্রাম। আমাদের স্নায়ু ও হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
  • ভিটামিন বি-২ঃ ০.০৫ মিলিগ্রাম। এটি আমাদের দেহের শক্তি ও কোষের বৃদ্ধি রক্ষায় কাজ করে।
  • আয়রনঃ ২.২ মিলিগ্রাম। রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে জরুরী, রক্তসল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন সিঃ ৫.৯ মিলিগ্রাম। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ত্বকের জন্য ভালো।
  • ভিটামিন কেঃ ১৩.২ মাইক্রোগ্রাম। রক্ত জমাট বাধাতে কাজ করে।
  • পটাসিয়ামঃ ৩২০ মিলিগ্রাম। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
  • ফসফরাসঃ ১২ মিলিগ্রাম।
  • ক্যালসিয়ামঃ ৩৩ মিলিগ্রাম।
  • ম্যাগনেসিয়ামঃ ১২ মিলিগ্রাম।

সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গাজরের অবদান গুলো

গাজর আমদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। গাজরে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে। যা ত্বককে ভেতর থেকে সুস্থ ও সতেজ করে তুলে। গাজরের ভেতরে থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বককে শুকাতে দেয় না। ত্বকের রঙ বা স্কিন ভালো ও উজ্জ্বল করে এবং দাগ ছোপ পড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। নিয়মিত গাজর খেলে ত্বক আরো উজ্জ্বল ও টানটান হয় বয়সের ছাপ দূর হয়। তাই আমাদের পরিমান অনুযায়ী প্রতিদিন নিয়মিত গাজর খাওয়া উচিত। 

রোগ প্রতিরোধে গাজরের প্রয়োজনীয়তা হলো

গাজর একটি শীতকালীন সবজি। গাজরের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে। গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে১, বিটা ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবারসহ আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। গাজর আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। চলুন দেখে নেওয়া যাক গাজর খাওয়ার জন্য আমাদের কোন কোন রোগ প্রতিরোধ করে।

ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সহায়তা করে। রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। ওজন কম করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। দৃষ্টিশক্তি, ত্বক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। স্নায়ু ও হজম প্রক্রিয়ায়। শক্তি উৎপাদন ও কোষের বৃদ্ধি রক্ষায়। রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনে জরুরি, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ত্বকের জন্য ভালো। রক্ত জমাট বাঁধায় সাহায্য করে। কোষ বিভাজন ও নবজাতকের সুস্থ বিকাশে জরুরি। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে। হাড় ও দাঁতের গঠনে। শক্তি উৎপাদন ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়। স্নায়ু ও পেশির কার্যক্রমে সহায়ক।

এটি থেকে বুঝা যায় যে গাজর খাওয়া আমাদের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ এবং গাজর আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতোটা বৃদ্ধি করে।

কাচা গাজর খেলে যা হবে

কাচা গাজর খেলে কি হয় তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। কাচা গাজর আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। গাজরের রসের উপকারীতা নিয়ে আমরা একটু আগে আলোচনা করলাম। এখন আমি আলোচনা করবো কাচা গাজর খেলে যা হবে। গাজর একটি শীতকালীন সবজি এটি খেতে অনেক সুস্বাদু। গাজর অনেকেই আছে যারা রান্না করে খান। তবে গাজর রান্না করার থেকে কাচা খেতে পারলে এটির উপকার সব থেকে ভালো পাওয়া যায়। নিয়মিত গাজর খেলে এটি আমাদের শরীরে ওষুধ হিসেবে কাজ করে। কাচা গাজর খেলে যা যা হবে।

কাচা গাজরে অনেক পরিমানে ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবারসহ আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে। যা আমাদের চোখের সকল সমস্যা দূর করে এবং আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। কাচা গাজরের ভিটামিন সি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কাচা গাজর আমাদের দেহের খারাপ পদার্থ বার করে দেয়। গাজর আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। কাচা গাজরে থাকা ভিটামিন কে আমাদের দেহের হাড় সক্ত করে।

আপনারা যারা মুখের কালো দাগ, ছোপ এবং ব্রণ নিয়ে মুখের বিভিন্ন সমস্যাই ভুগছেন তারা নিয়মিত কাচা গাজর খেতে পারেন। কেননা কাচা গাজরের মধ্যে থাকা বিশেষ কিছু উপাদান আছে যা ত্বকের সুন্দর্য ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। গাজরের ভেতর চিনির পরিমান কম থাকে ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি অনেক কম থাকে। কাচা গাজর ক্যান্সারের ঝুকি কমাই। কাচা গাজর আমাদের দেহের হরমনের ব্যালেন্স ঠিক রাখে, আমাদের মন প্রফুল্ল ও মেজাজ সতেজ রাখে আর আমাদের মানসিক চাপ কমায়।

কাচা গাজরে আছে অনেক উপকারী উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক দরকারি। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে আমাদের কাচা গাজর খাওয়া উচিত।

চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধিতে কতটুকু গাজর খেতে হবে

গাজরে থাকা ফাইবার ভিটামিন এ, মিনারেল খনিজ, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ উপাদান। যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ও আমাদের চোখের সকল সমস্যা দূর করে। তাই চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধিতে কতটুকু গাজর খেতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
গাজর একটি পুষ্টিগুণে ভরা একটি সবজি এটি আমাদের চোখের জন্য অনেক কার্যকারী। USDA এর তথ্য অনুযায়ী প্রতি ১০০ গ্রাম কাচা গাজরে ১৬৭০৭ IU পরিমান ভিটামিন এ থাকে। তার মানে আমরা যদি প্রতিদিন কম করে হলেও ৫০ গ্রাম গাজর খাই তাও চোখ তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন নিয়ে বা সংগ্রহ করবে। গাজরে থাকা ভিটামিন এ চোখের কর্ণিয়া ও রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে।

তাছাড়া গাজরে রয়েছে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যা আমাদের বয়সের সাথে সাথে আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে দুর্বল হওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে। গাজর চোখের পেশির চাপ এবং ক্ষতিকারক রশ্মি থাকে চোখকে রক্ষা করে। তাই আমাদের উচিত হবে যে প্রতিদিন পরিমান অনুযায়ী কাচা গাজর খাওয়া।

গাজর সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তব্য

সর্বশেষ আমরা গাজর সম্পর্কে সকল বিষয় বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি। এবং আমরা আশা করছি যে গাজর আমাদের দেহের জন্য কতোটা প্রয়োজনীয় তা আপনারা জানতে পেরেছেন এবং আমাদের প্রতিদিন কি পরিমানে গাজর খেতে হবে সে সম্পর্কেও আপনি জানতে পেরেছেন।

আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি পরে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এটি আপনাদের বন্ধুদের সাথে সেয়ার করবেন এবং আপনি যদি এই ধরনের আর্টিকেল পড়তে চান। তাহলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে পারেন। কারন আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এই রকম আর্টিকেল প্রতিনিয়ত পোস্ট করে থাকি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url